![](https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhZ2-ah7IgSMpp2iHlj1aSBlXmngr8P4R9zK37XVk1GNF-32D0oTGQyuliimgrVM_xVOdjDlAiKqvOqguIj4md5CmhyphenhyphenIeGrVRdyw6hDRgWjdB9Gk3KXACURQ8QmnEEoOezjUr9JXZi6qco/s320/1466179659index.jpg)
আর রাকিব হাসানের পড়ালেখা ও শোবার ঘরটি পল্লী কবি জসিম উদ্দীনের “বাড়ি তো নয় পাখির বাসা, ভেন্না পাতার সানি, একটু খানি বৃষ্টি হলেই গড়িয়ে পড়ে পানি” কবিতার লাইনের মতোই সদা সত্য। ঝিনাইদহের হরিনাকুন্ডু উপজেলার আদর্শ আন্দুলিয়া উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এ বছর এসএসসি
পরীক্ষায় গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছিলো তাহেরহুদা গ্রামের নাসির উদ্দিন বকুলের ছেলে রাকিব হাসান। বাবা মা ও দুই ভাইয়ের সংসারে রাকিব হাসান বড়।
ছোট ভাই সাকিব হাসান পড়ে ৬ষ্ঠ শ্রেনীতে। সহায় সম্পিত্তির মধ্যে বাবার আছে কেবল ভিটে বাড়ি। সেই ভিটেই রয়েছে ভাঙ্গাচোরা চাটাই দিয়ে ঘেরা একটি নড়বড়ে ঘর। সেই কুড়ে ঘরেই মেধার আলো ছড়িয়েছে রাকিব হাসান। তার এই কৃতিত্বে গ্রামের মানুষ হতবাক।
যে ছেলেটি খালে বিলে ডোবা নালায় বাবার সাথে মাছ ধরেতা সেই কিনা গ্রামের মুখ উজ্জল করলো ? বিস্ময়ের সাথে জানালেন এলাকার ইউপি মেম্বর সাব্বির হোসেন। তিনি বলেন, শীত আর ঝড় বৃষ্টিতে এমন ঘরে পড়ালেখা ও বসবাস করা সম্ভব না। একটু বৃষ্টি হলেই ভেসে যায় রাকিবদের ভাঙ্গাচোরা ঘরখানি।
মা রিতা খাতুন জানান, রাকিবের বাবা মাঝে মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়লে বন্ধ হয়ে যায় আমাদের খাওয়া দাওয়া। অনেক সময় না খেয়ে দিন পর করতে হয়। কান্না ভেজা কন্ঠে রিতা খাতুৃন আরো জানান, ছেলে বানিজ্য বিভাগ থেকে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েও টাকার অভাবে কলেজে ভর্তি করতে পারছি না। রাকিব হাসানের বাবা নাসির উদ্দিন বকুল জানান, ছেলে আর আমি দিন মজুরের কাজ করে প্রতি মাসে দুই থেকে ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করি।
এই টাকা দিয়ে সংসার চালিয়ে দুই ছেলের পড়ালেখার খরচ চালানো আমার জন্য দুঃসাধ্য। তারপরও বাধ্য হয়েই ধার দেনা আর সুদের টাকা নিয়ে করতে হচ্ছে। তাহেরহুদা গ্রামের রিনা ফার্মেসির মালিক সজল ও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুস জানান, রাকিব হাসান প্রচন্ড মেধাবী ও বুদ্ধিমান। ছোট কাল থেকেই লেখাপড়ার প্রতি তার প্রবল ইচ্ছা।
তার পড়ালেখার জন্য সমাজের বিত্তবানদের পাশে দাড়ানো উচিৎ। আদর্শ আন্দুলিয়া উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাসুদুল হক টিটু জানান, রাকিব হাসান আমাদের স্কুলের মুখ উজ্জল করেছে। তার বাড়িতে আমি গিয়ে হতবাক হয়েছি। ভাঙ্গাচোরা ঘরে মেধাবী ছাত্র রাকিব পড়ালেখা করে। প্রধান শিক্ষক জানান, দেশ-বিদেশের হৃদয়বান ব্যক্তিরা অসহায় রাকিবের পাশে দাড়ালে আমার বিশ্বাস সে একদিন অনেক বড় হতে পারবে।
মেধাবী ছাত্র রাকিব বলেন, দিনের বেলা বাবার সাথে পান বরজে দিনমজুরের কাজ করতাম। সময় পেলে খালে বিলেও মাছ ধরতাম। সেই মাছ বিক্রি করে বাবা সংসার চালান। কিন্তু পড়ালেখা বন্ধ করিনি। দিনের বেলা দিন মজুরের কাজ করতে হতো বলে রাতে ও ভোর বেলা পড়তাম। বাবা কলেজে ভর্তির টাকা জোগাড় করতে পারছে না ভেবে রাকিব হাসানের মন খারাপ।
মেধাবী ছাত্র রাকিব হাসানের সহায়তার জন্য বাবা নাসির উদ্দিন বকুল বিত্তবানদের সহায়তা কামনা করেছেন।
সাহায্য পাওয়ার ঠিকানা-মোঃ নাসির উদ্দিন, সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর-৩৩০৪১ ইসলামী ব্যাংক, ঝিনাইদহ শাখা, ঝিনাইদহ।
এছাড়া মুঠোফোনে যোগাযোগ ও বিকাশের মাধ্যমে ০১৭৬৬৭৫৫০১৩ এই নাম্বারে টাকা পাঠাতে পারেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন