![](https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhnoacn9oWo0ekAFX2jbDpP-iMhyphenhyphenfO1AKaIMJsWpAk_aowk3tMnUMrUuOGCeXc7XyxnG5xHpTYR83I7d4CgtT7eUJ7km9TPrJYSbt_uK2MfjmD0Bpp1iIRfyiaRgvE3YwjeMUBd3kFKkOY/s320/photo-1467084614.jpg)
হস্তচালিত
তাঁত দিয়ে কাপড় বুনছেন এক শিল্পী। একটি কাপড় তৈরি করতে খুব কষ্ট করতে হলেও
তাঁদের অনেকে সে অনুযায়ী পাচ্ছেন না মজুরি।
এবার রোজার ঈদ সামনে রেখে হাসি নেই নরসিংদীর তাঁতশিল্পীদের মুখে। একসময় তাঁতশিল্পের জন্য প্রসিদ্ধ এলাকা হিসেবে নরসিংদীর খ্যাতি ছিল দেশজুড়ে, যা দেশের সীমানা ছাড়িয়ে ছড়িয়ে পড়েছে বিদেশেও। সেই হাতেটানা তাঁত এখন বিলুপ্তির পথে। হস্তচালিত তাঁতের স্থান দখল করেছে বিদ্যুৎ চালিত তাঁত বা পাওয়ারলুম।
পটভূমি
নরসিংদীতে ঠিক কবে থেকে তাঁতশিল্প গড়ে উঠেছে, তা বলা মুশকিল। তবে প্রবীণ তাঁত কারিগরদের সঙ্গে কথা বলে ও ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, আদি বসাক সম্প্রদায়ের তাঁতিরাই হচ্ছে আদি তাঁতি। তাঁদের একশ্রেণির যাযাবর বলা চলে।
প্রায় শত বছর পূর্বে আদি বসাক সম্প্রদায়ের তাঁতিরাই হস্তচালিত তাঁতের কাজ শুরু করেন। শুরুতে তাঁরা সিন্ধু অববাহিকা থেকে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে এসে তাঁতের কাজ শুরু করেন। কিন্তু সেখানকার আবহাওয়ায় শাড়ির মান ভালো না হওয়ায় তাঁরা নতুন জায়গার সন্ধানে বের হয়ে পড়েন। চলে আসেন বাংলাদেশের রাজশাহী অঞ্চলে। সেখানেও আবহাওয়া অনেকাংশে প্রতিকূল দেখে বসাকরা দুই দলে ভাগ হয়ে যান। একদল চলে আসেস নরসিংদী ও কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর। অন্যদল যান ঢাকার ধামরাইয়ে। তবে তাঁদের কিছু অংশ সিল্কের কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে রাজশাহীতেই থেকে যান।
![](https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgwT3M1JQUDSxrWPDTlO-AQ7-DTRdWc-3VNRdFY9wHyNIVwJAXDn9Mtm0sn6alZoH26F98nsnNuGAgbBy4Zbe9CAozYN4lFoBOv9ohy3KdRznyawO7wXfYQ5e4QUnSRgZjBUGhju7y7bio/s320/1467083927-Narsingdi-1.jpg)
তাঁতশিল্পী ও তাঁতকল মালিকদের ভাষ্য
রায়পুরা উপজেলার হাসনাবাদ এলাকার হস্তচালিত তাঁতের কারিগর নুরুল আমিন বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে এই কাজের সঙ্গে জড়িত হয়েছি। জীবনে অন্য কোনো কাজ শিখিনি। আমরা সারা দিন কাজ করে যে পরিমাণ কাপড় তৈরি করি, পাওয়ারলুমে কয়েক ঘণ্টায় সেই পরিমাণ কাপড় তৈরি হয়। সারা দিন কাজ করে চারটি গামছা তৈরি করতে পারি। প্রতি গামছায় ৪০-৫০ টাকা করে পাই, যা দিয়ে একদিনের বাজার খরচও চলে না।’
তাঁতকল মালিক মো. আহসান মিয়া বলেন, ‘একসময় আমাদের এলাকাজুড়ে তাঁতকল ছিল। পাওয়ারলুমের সঙ্গে উৎপাদনে টিকতে না পেরে অনেকেই এ পেশা ছেড়ে দিয়েছে। তবে আমাদের কারখানা থেকে আড়ংয়ের মতো নামীদামি কোম্পানিগুলো কাপড় নিচ্ছে। তাই আমরাসহ বেশ কয়েকটি কারখানা এখনো টিকে আছে।’
চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি ও নরসিংদী জেলা পাওয়ারলুম টেক্সটাইল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে এম ফজলুল হক বলেন, জেলার তিন লক্ষাধিক তাঁত কারখানা রয়েছে। এর সঙ্গে সাত লক্ষাধিক লোকের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তাঁতশিল্পেও প্রযুক্তির ছোঁয়া লেগেছে। খুব অল্প সময়ে বেশি কাপড় উৎপাদন হয়। তাই হস্তচালিত তাঁতশিল্প প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে গেছে।
ফজলুল হক আরো বলেন, একসময় নরসিংদীর সব অঞ্চলেই হস্তচালিত তাঁত ছিল। সে সময় পাওয়ারলুম ছিল না। তবে বর্তমানে বিদ্যুৎ চালিত তাঁত বা পাওয়ারলুমে দ্রুত উৎপাদন হয়। তাই সবাই ধীরে ধীরে পাওয়ালুমের দিকে আগ্রহী হচ্ছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন