বৃহস্পতিবার, ১৬ জুন, ২০১৬

নরসিংদী ২ পলাশ আসনের রাজনীতি শক্ত অবস্থানে আওয়ামীলীগ সাংগঠনিক দূর্বলতায় বিএনপি


নিজ¯^ প্রতিবেদকঃ

“পলাশের মাটি বিএনপির ঘাঁটি“ এ
শক্ত অবস্থানে আওয়ামীলীগঃ পলাশ উপজেলা আওয়ামীলীগের বর্তমান সভাপতি আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলিপ ২০০৪ সালে উপজেলা সম্মেলনের মাধ্যমে প্রথম সভাপতি নির্বাচিত হয়ে দূর্বল আওয়ামীলীগকে সাংগঠনিক ভাবে শক্তিশালী করে। এরপর ২০০৮ সালের জাতিয় নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন নিয়ে চার চার বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও একাধিক বারের মন্ত্রী বর্তমান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খানকে পরাজিত করে। সেই সাথে পলাশ আসনে প্রথম নৌকা প্রতীকে আওয়ামীলীগের বিজয় অর্জন করেন। দীর্ঘ ৫ বছর ক্ষমতা থাকা কালীন সময় তিনি দলকে আরও মজবুত ও শক্তিশালী রুপ হিসেবে গড়ে তোলেন।  এরপর আর থেমে যায়নি আওয়ামীলীগ। দলীয় প্রার্থী দিয়ে উপজেলা চেয়াম্যান
ও পৌরসভার মেয়র এর আসনটিও দখলে নিয়ে নেয়। সর্বশেষ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী নির্বাচনে মহাজোট থেকে নৌক প্রতীকে জাসদ নেতা জাহিদুল কবিরকে মনোনয়ন দিলে অনেকটা বিভ্রন্তির মধ্যে পড়ে উপজেলার তৃণমূল আওয়ামীলীগ। পরে আওয়ামীলীগের শক্ত অবস্থান ধরে রাখার জন্য সভাপতির আপন ছোট ভাই কামরুল ইসলাম পোটনকে সতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দ্বার করান। তৃণমূল আওয়ামীলীগের সহযোগিতায় সতন্ত্র প্রার্থী কামরুল ইসলাম পোটন মহাজোটের প্রার্থীকে পরাজিত করে দোয়াত কলম মার্কায় সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়। ফলে রাজ্য এবং রাজত্ব্য দুটিই পেয়ে যায় আওয়ামীলীগ। আর যারা সভাপতির নির্দেশনা অমান্য করে মহাজোটের নির্দেশে নৌকা প্রতিকের নির্বাচন করেছে তাদের অনেকেই ছিটকে পড়ে গেছে আওয়ামীলীগ থেকে। গত ২০১৪ সালে ১৪ ডিসেম্বর সর্বশেষ উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনে পূণরায় আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলিপকে সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। পাশাপাশি সাবেক সাধারণ সম্পাদক শেখ মোঃ ইলিয়াসকে সরিয়ে উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ওবায়দুল কবির মৃধাকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। এছাড়া বর্তমান সংসদ সদস্য কামরুল ইসলাম পোটনকে সিনিয়র সহ সভাপতি করে ৬৭ বিশিষ্টি কমিটি গঠণ করা হয়।
পলাশ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবাদুল কবির মৃধা জানান, বাংলাদেশের ¯^াধীনতা যুদ্ধের পর ২০০৮ সালে প্রথম আমরা সংসদ সদস্যের ক্ষমতা অর্জন করি। সভাপতির অন্যন্ত আন্তরিকতা, সাহসিকতা ও দক্ষতার কারেণই বিএনপির মতো একটি শক্তিশালী দলের একজন মন্ত্রীকে পরাজিত করে বিজয় অর্জন করতে পেরেছি। বর্তমানে পৌরসভার ওয়ার্ড সহ প্রত্যেকটি ইউনিয়নে আমাদের কমিটি গঠন করা হয়েছে। বাকি অঙ্গসংগঠনের কমিটি আস্তে আস্তে শেষ করা হবে। আমরা আশা করি ঐকবদ্ধের মাধ্যমে আগামি নির্বাচনেও দল থেকে এমপি নির্বাচিত করে সভানেত্রীকে উপহার দিব।
যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আবদুল আলী ভূইয়া জানান, বর্তমানে আওয়ামীলীগের তৃণমূল পর্যায় থেকে শুরু করে থানা পর্যায়ের অবস্থান শক্তিশালী ও সুদৃয় রয়েছে। এবং আগামী দিন দলের এ অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে যে কোন নির্বাচনে বিজয় নিশ্চিত করবো।
সাংগঠনিক দূর্বলতায় বিএনপিঃ ২০০৮ সালের নির্বাচনে পলাশের বিএনপির শক্ত ঘাটির প্রথম পরাজিত হওয়ার পর থেকে নেতাকর্মীদের মনোবল ভেঙ্গে পড়ে। পাশাপাশি অভ্যন্তরিয় কোন্দল ও মামলা হামলার ভয়ে অনেকটা ঘরোয়া পরিবেশে পার করছে উপজেলা বিএনপি । তৃণমূল নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়,  ড.আবদুল মঈন খানকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যর দায়িত্ব পাওয়ার পর অনেকটা সময় ঢাকায় অবস্থান করতে হয়। সেই সুযোগে উপজেলা বিএনপির অধিকাংশ নেতা দলের যথাযথ দায়িত্ব পালন না করে মামলা হামলা থেকে বাঁচতে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের সাথে লিয়াজু করে যাচ্ছে। বিএনপি ও পৌর বিএনপির কয়েকজন নেতা ছাড়া বাকিদের কোন দলীয় কার্যক্রম দেখা যায় না। ফলে অধিকাংশ কমিটিতে রয়েছে সাংগঠনিক দূর্বলতা।
জানা যায়, পলাশ আঞ্চলিক শ্রমিক দলের নামে মাত্র একটি কমিটি রয়েছে। যার কোন কার্যক্রম নেই। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শ্রমিক দলের সভাপতি আল আমিন দলের কার্যক্রম বাদ দিয়ে বর্তমানে সিলেটের একটি সিমেন্ট কোম্পানীতে চাকুরী করছে। এবং সপরিবারে সেখানে বসবাস করছে। অপরধিকে সাধারণ সম্পাদক গোলজার হোসেন কিডনি জনিত সমস্যার কারণে বছরখানেক আগে মারা যায়।

কসময় এ কথা প্রচলন থাকলেও বর্তমানে তা রুপ নিচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের। সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌরসভার মেয়রের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ গুলো ধরে রাখতে না পাড়ায় অনেকটা কোন ঠাসা হয়ে পড়েছে উপজেলা বিএনপি। এছাড়া সাংগঠনিক দূর্বলতা ও মামলা হামলার ভয়ে অনেকটা ঘরোয়া পরিবেশে চলতে হচ্ছে তাদের। আর সেই সুযোগ কে কাজে লাগিয়ে তৃণমূলকে শক্তিশালী করে শক্ত অবস্থানে চলছে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন