মঙ্গলবার, ১৮ এপ্রিল, ২০১৭

পলাশে কোটি টাকা নিয়ে সমিতি লাপাত্তা ------- অধিক মুনাফার ফাঁদে পড়ে সর্বশান্ত পাঁচ শতাধিক গ্রাহক



পলাশ ( নরসিংদী) সংবাদদাতাঃ
নরসিংদীর পলাশে নামমাত্র সঞ্চয়ের বিপরীতে মোটা অংকের টাকা ঋণ প্রদান ও অধিক মুনাফা অর্জনের ফাঁদে ফেলে পাঁচ শতাধিক গ্রাহকের কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে ক্যানভাস সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতিন লিঃ নামে একটি সমিতি। ঋণ ও অধিক মুনাফা অর্জনের আশায় ধার-দেনা করে সঞ্চয়, এফডিয়ার হিসেবে টাকা জমা দিয়ে গ্রাহকরা চরম বেকায়দায় পড়েছেন। শুধু তাই নয়, সমিতিটির দায়িত্বরত কর্মকর্তারা পালিয়ে যাওয়ার খবরে কেউ কেউ অসুস্থও হয়ে পড়েছেন। এ ঘটনা এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে,
বছর কয়েক আগে উপজেলার ওয়াপদা এলাকার হাসান আলীর বাড়ির দুতলা ভবন ভাড়া নিয়ে সেখানে অফিস স্থাপন করে ক্যানভাস সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতিন লিঃ। সমিতিটি অফিস স্থাপন করার পর থেকে ওয়াপদা নতুনবাজার, পলাশ বাজার, জনতা, প্রাণ গেইট ও ঘোড়াশাল সহ বিভিন্ন এলাকায় তাদের কর্মী পাঠিয়ে প্রচারপত্র বিলি ও সরাসরি গ্রাহকদের সাথে কথা বলে নামমাত্র সঞ্চয়ের বিপরীতে ঋণ প্রদানের প্রস্তাব দিতে থাকে। এছাড়া প্রতি লাখে দুই থেকে তিন হাজার টাকা মাসিক মুনাফা লাভের লোভ দেখিয়ে গ্রহাকদের নিকট থেকে মোটা অংকের অর্থ সংগ্রহের করে। জানা যায়, গত কয়েক মাস ধরে গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেয়ার কথা বলে কোন প্রকার নোটিশ ছাড়াই আত্মগোপনে চলে যায় সমিতির দায়িত্বরত লোকজন। কর্মকর্তাদের মোবাইল ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন প্রতারিত গ্রাহকরা। এ সংবাদ গ্রাহকদের মাঝে ছড়িয়ে পড়লে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রাহকরা এসে অফিসের নিচে জড়ো হয়ে হতাশা ব্যক্ত করছেন। কোটি টাকা আমানত নিয়ে উধাও হয়ে যাওয়ায় পথে বসার উপক্রম হয়েছে অধিকাংশ গ্রাহকদের। সমিতিতে কর্মরত স্থানীয় মাঠ কর্মি লিপি বেগেম ও তারেক রহমান জানান, উপজেলার প্রায় পাঁচ শতাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে কোটি টাকা নিয়ে ম্যানেজারসহ সিনিয়র কর্মকর্তাগণ আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় আমরা বিপাকে রয়েছি। পলাশ ওয়াপদা এলাকার গ্রাহক নিলুফা আক্তার জানান, ক্যানভাস সমিতিতে আমার ৪ লাখ এফডিআর ছিল। এ মাসে আমার মেয়াদ শেষ হয়েছিল। টাকা গুলো অনেক কষ্ট করে জমিয়েছিলাম। পলাশ বাজার এলাকার ফার্নিচার ব্যবসায়ী মতিন ও প্রসাধনী দোকানদার চন্দন দাস জানান, অধিক মুনাফা লাভের আশায় পাঁচ লাখ টাকা এফডিআর করেছিলাম। এখন সবই শেষ হল। এমনিভাবে পলাশ বালুচর পাড়া এলাকার নাছরিন, মানসুরা, ওয়াপদা এলাকার আক্তারুজ্জামানের লক্ষাধিক টাকাসহ অনেকেই এই প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এদিকে সমিতিটির সভাপতি রিপন হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক কাদির হোসেনের সাথে মোবাইল ফোনে যোগযোগ করতে গিয়ে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে পলাশ উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা শাহিন সুলতানা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, ক্যানভাস সমিতিটি বিভাগীয় পর্যায় অনুমতি নিয়ে জেলা ব্যাপি শাখা স্থাপন করেন। সমিতিটি পূণরায় চালু করার জন্য সমবায়ের পক্ষ থেকে গ্রাহকদের দিয়ে নতুন কমিটি গঠনের পক্রিয়া হচ্ছে। 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন