শনিবার, ১১ মার্চ, ২০১৭

পলাশে রাতের আধারে অবৈধ ভাবে কেটে নেওয়া হচ্ছে একে কে খান অর্থনৈতিক অঞ্চলের মাটি

নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়ন এলাকায় রাতের আধারে অবৈধভাবে চলছে শীতলক্ষ্যা নদীর তী ও সরকারি খাস জমি থেকে মাটি কাটা ও বালু উত্তোলনের মহোৎসব। প্রতিনিয়ত ৫০টির অধিক ট্রলার দিয়ে রাতের আধারে কেটে নিয়ে যাচ্ছে ডাঙ্গার কাজিরচর এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে অবস্থিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনকৃত অর্থনৈতিক অঞ্চল একে কে খান প্রকল্পের বরাদ্দকৃত জমির মাটি। যার ফলে ভেস্তে যাওয়ার উপক্রম দেখা দিয়েছে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত একে কে খান অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রকল্পটি।
একে কে খান অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রকল্পের হেড অব সিকিউরিটি অ্যান্ড এডমিন মেজর (অব.) আসিফ রেজা জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ ডাঙ্গা ইউনিয়নের কাজিচর এলাকার স্থানীয় কিছু প্রভাশালী ব্যক্তির সহযোগিতায় প্রকল্পের বরাদ্দকৃত জমি থেকে রাতের আধারে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত গভীর রাতে শতাধিক লোক তাদের নেতৃত্বে ট্রলার ভরে মাটি কেটে নিয়ে যায়। মাটি কাটায় বাধা দিতে গিয়ে প্রকল্পের কর্মকর্তাদের উল্টো হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে। এ ব্যাপারে পলাশ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েও আশানুরূপ কোন সহযোগিতা পাইনি। সর্বশেষ বুধবার রাতে সিকিউরিটি ইনচার্জ মনিরুজ্জামান নিরাপত্তা কর্মীদের নিয়ে মাটি কাটায় বাধা দিতে গেলে তাকে হুমকির মুখে পড়তে হয়।
একে কে খান অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার মো. আক্তার হোসেন জানান, কাজিরচর এলাকায় কাজৈর মৌজায় ২৫০ একর জমির উপর প্রায় এক হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলা হয়েছে একে খান অর্থনৈতিক অঞ্চল। এ অঞ্চলের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ থাকবে নারায়নগঞ্জ নদী বন্দর, মেঘনা মংলা এবং চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর। এ টার্মিনাল থেকে খালাস হওয়া পণ্য যাবে রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের এলাকায়। এছাড়া এখানে প্রায় ১ লাখ মানষের কর্মসংস্থানের সৃষ্ট হবে। এতে করে নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর জেলার মানুষের ভাগ্য পাল্টে যাবে। অপর দিকে বেশ কিছুদিন যাবত এ অঞ্চলের অভ্যন্তরে অবস্থিত সরকারি খাস জমি এবং শীতলক্ষা নদীর তীর থেকে রাতের আধারে এলাকার কিছু প্রভাশালী লোক প্রতিনিয়ত লাখ লাখ টাকার মাটি কেটে নৌকা যোগে অন্যত্র নিয়ে বিক্রি করছে। প্রভাবশালীদের ভয়ে কোম্পানির লোকজন তো দূরের কথা এলাকার কোন ব্যক্তি কথা বলার সাহস পাচ্ছে না। মাটি কেটে নিয়ে যাওয়ার ফলে আগামী বর্ষা মৌসুমে একে কে খান অ্যান্ড কোম্পানি মারাত্মক ক্ষতিকর সম্ভাবনা রয়েছে এবং এই অর্থনেতিক অঞ্চলটির কার্যক্রম ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে আলাপ করলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, কোম্পানীর পক্ষ থেকে যে অভিযোগটি করা হয়েছে তাতে কারো নাম উল্লেখ করা হয়নি। প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চালাচ্ছি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন