রবিবার, ১৩ আগস্ট, ২০১৭

কোরবানি ঈদকে ঘিরে দেশীয় পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করছে নরসিংদীর খামারিরা


নরসিংদী সংবাদদাতাঃ
নরসিংদীতে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে দেশীয় পদ্ধতিতে গরু  মোটাতাজাকরণ করছেন খামারি ও কৃষকরা। এ পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজাকরণ করায় এই অঞ্চলের গরুর চাহিদাও অনেক বেশি। বাজারে দেশিয় গরুর ব্যাপক চাহিদা থাকায় এই ঈদে লাভবান হবেন বলে আশাবাদী কৃষকরা।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়,
বেশির ভাগ খামারে দেশীয় গরুই বেশি। এ গরু গুলোকে পরম যতেœ প্রতিনিয়ত দেখভাল করছেন খামারিরা। কারণ কোরবানির হাটে যে গরু দেখতে যতো আকর্ষণীয় হবে, তার দামও হবে ততো বেশি হবে। তাই গরুর খাদ্য তালিকাটাও বেশ সমৃদ্ধ। প্রতি বছরই কোরবানি ঈদ এলে গরু বিক্রি করে বাড়তি আয় করেন এই জেলার কৃষকরা। ছোট বড় খামারের পাশাপাশি প্রতিটি কৃষক পরিবার ঈদকে সামনে রেখে গরু মোটাতাজা করে থাকেন। নিষিদ্ধ ঘোষিত ¶তিকর ইনজেকশন ও ট্যাবলেট পরিহার করে ঘাস খড়ের পাশাপাশি খৈইল, গুড়া, ভূষি খাদ্য হিসেবে খাওয়ানোর মাধ্যমে মোটাতাজা করা হয়েছে এসব গরু। বাজারে দেশিয় গরুর ব্যাপক চাহিদা থাকায় এই ঈদে লাভজনক হবেন বলে আশাবাদী তারা।
শিবপুর উপজেলার মুনসেফরচর গ্রামের খামারি কিবরিয়া গাজী জানান, তাঁর খামারে সাওয়াল, সিন্ধি,  নেপালি, অস্ট্রেলিয়ান ও দেশি মিলে ৮০টি গরু রয়েছে। ঘাস, দানাদার খাবার, খড়, ভুসি, খৈল গরুকে খাইয়ে গরু মোটাতাজা করছেন। ওষুধ বা রাসায়নিক ব্যবহারের চেয়ে এ পদ্ধতিতে খরচও কম। তিনি আরো জানান, কোরবানির হাটের জন্য আকর্ষণীয় করে তুলতে খামারের গরুগুলোকে প্রতিদিন অনেক যতœ নিতে হচ্ছে।
মাধবদীর নুরালাপুর ইউনিয়নের আলগী গ্রামের ডেইরি অ্যান্ড অ্যাগ্রো ফার্মের মালিক হাজী মোঃ এমরান হোসেন বলেন, ‘আমি বছর খানেক আগে বিভিন্ন জাতের ৩৪টি গরু কিনি। গরু গুলোকে প্রাকৃতিকভাবেই মোটাতাজা করেছি। আগে কম দামে গরু কিনেছি। কোরবানির হাটে ভালো দামে বিক্রি করব, আশা করছি।’
রায়পুরার চরাঞ্চলের চরমধুয়া গ্রামের গ্রীণ এগ্রো ফার্মস এর মালিক মোঃ আহসান শিকদার বলেন, দেশিয় জাতের শতাধিক গরু লালন পালন করা হয়েছে তার খামারে। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিকভাবে এসব গরু মোটাতাজা করা হয়েছে। দেশিয় গরুর চাহিদা থাকায় এরমধ্যে খামার পরিদর্শনে আসছেন ক্রেতারা। অনেকে খামার থেকেই গরু কিনে নেয়ার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করছেন।
একই উপজেলার দড়িগাঁও গ্রামের গরুর খামারী দুলাল মিয়া জানান, শুধু ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য নয় নিজের কোরবানির গরু সংগ্রহ ও মানুষকে স্বাস্থ্যসম্মত গরু প্রদানের জন্যই তার এ উদ্যোগ। এছাড়া বাজারেও দেশিয় জাতের এসব গরুর চাহিদা রয়েছে।
নরসিংদী জেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগ কর্মকর্তা ডা. মোঃ আব্দুস ছামাদ বলেন, ঈদ উপলক্ষে জেলার ছোট বড় মিলিয়ে দশ হাজার খামারি ও কৃষক দেশিয় পদ্ধতিতে ৩০ হাজার গরু মোটাতাজা করেছেন। এবছর জেলার কোথাও কৃত্রিম উপায়ে পশু পালন করেনি খামারি বা কৃষকরা। সেক্ষেত্রে জেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগ তদারকি করেছেন এবং খামারিরাও এ বিষয়ে অনেক সচেতন হয়েছেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন