নরসিংদী সংবাদদাতাঃ
নরসিংদীর বেলাবতে আরব আমিরাতের খেজুর চাষ করে আশানুরুপ ফলন পেয়েছেন তাজুল ইসলাম নামে এক প্রবাস ফেরত কৃষক। বিঘা প্রতি তিন লাখ টাকা ব্যয় করে পাঁচ বছরেই ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা আয়ের ¯^প্ন দেখছেন তিনি। তার এ সফলতা দেখে অন্যরাও খেজুর চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
বেলাব উপজেলার চর কাশিমনগর গ্রামের খেজুর চাষি তাজুল ইসলাম জানান, তিনি ১৪ বছর দুবাইয়ে প্রবাস জীবন কাটিয়ে ২০১২ সালে দেশে ফেরেন। ফেরার সময় ৬ হাজার খেজুর বিজ ও কিছু সংখ্যক চারা নিয়ে আসেন। প্রবাস জীবনে খেজুর বাগানে কাজের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নিজের দুই বিঘা জমিতে রোপন করেন বেরহি, খালাস, শিশি, নাখাল, ও সেজরি জাতের খেজুর। এতে উৎপাদিত হয়েছে ১৫ হাজার চারা। এর মধ্যে উচ্চ ফলনশীল বেরহি জাতের চারা বেশি উৎপাদিত হয়েছে। গত কয়েক বছরে বাগানে উৎপাদিত চারা বিক্রি করেই পুঁজি উঠিয়ে লাভবান হয়েছেন তিনি।
তিনি আরও জানান, জেলা ছাড়িয়ে অন্যান্য জেলা থেকেও চারা সংগ্রহ ও খেজুর চাষ পদ্ধতি দেখতে আসছেন আগ্রহীরা। চলতি বছর প্রথমবারের মতো তার বাগানের একটি গাছে দেখা দিয়েছে খেজুরের আশানুরুপ ফলন। গাছের পরিপক্কতা বাড়ার পর ফলন আরও বাড়বে। স্বাদ ও আকারে ভালো হওয়াসহ আশানুরুপ ফলন পেয়ে নতুন করে খেজুর বাগান সম্প্রসারণ করছেন তিনি।
পূর্নাঙ্গ বয়সে বেরহি জাতের প্রতিটি খেজুর গাছে প্রায় তিনশ’ কেজি খেজুর ধরবে বলে আশা করছেন তাজুল।
তিনি জানান, যেহেতু দেশে সেভাবে খেজুর চাষ হয় না তাই লাভ হবে মনে করেই খেজুর চাষ করছেন তিনি। খেজুর বাগানের চারাগুলো বড় হলে আয়ের পাশাপাশি অনেকের কর্মসংস্থানেরও সুযোগ সৃষ্টি হবে। বিঘা প্রতি খেজুরের জমিতে তিন লাখ টাকা ব্যয় করে পাঁচ বছরেই ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা আয় করা সম্ভব।
তুলনামূলকভাবে খেজুর চাষ দীর্ঘ মেয়াদী হলেও তাজুল ইসলামের এ সফলতায় খুশি স্থানীয় অন্যান্য কৃষকরাও। উপযোগী মাটি ও আবহাওয়া আশা যোগাচ্ছে তাদের। অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করছেন আমিরাতের খেজুর চাষের। পরামর্শ ও চারা সংগ্রহ করতে আসছেন দেশের দূর দূরান্তের কৃষকরাও। ফলে দিন দিন বাড়ছে খেজুর চাষির সংখ্যা। অনেকে তাজুল ইসলামের বাগান থেকে খেজুর চারা সংগ্রহ করে বাড়ির আঙিনা, বাগান ও সড়কের পাশে রোপন করছেন। প্রতি চারা ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর নরসিংদীর উপ-পরিচালক, মো. লতাফত হোসেন বলেন, ‘তাজুল ইসলামের খেজুর চাষের সফলতা জেলাজুড়ে কৃষকদের আগ্রহ বাড়িয়েছে। এরই মধ্যে শুধুমাত্র চারা বিক্রি করেই পুঁজি উঠিয়ে নিয়েছেন ওই কৃষক। জেলার অপেক্ষাকৃত উঁচু এলাকায় খেজুর চাষ সম্প্রসারণে আগ্রহী চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন