সোমবার, ৭ নভেম্বর, ২০১৬

শীতকাল শুরু না হতেই পলাশে পিঠা খাওয়ার আনন্দ


                                                                                   আল-আমিন মিয়া,বিশেষ প্রতিবেদকঃ

নরসিংদীর পলাশে শীতকাল শুরু না হতেই পিঠা খাওয়ার আনন্দ সবার মাঝে। শীতের মৌসুমকে সামনে রেখে উপজেলার বাজারগুলোতে বসছে বেশকয়েকটি পিঠার দোকান। সব পিঠা না পাওয়া গেলও ভাঁপা পিঠা,তেলের পিঠা, ডিম পিঠা, চিতল ও খোলা পিঠা পাওয়া যাচ্ছে এসব পিঠার দোকানে। প্রায় সবগুলো পিঠার দোকানেই দেখা গেছে ক্রেতাদের ভিড়। প্রতিটি পিঠার দোকানেই খরচ বাদ দিয়ে ১ থেকে ২ হাজার টাকা লাভ হচ্ছে। বাঙালির ঐতিহ্যবাহী খাদ্য তালিকায় এক অনন্য নাম পিঠা। পিঠা বাংলার সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। মিষ্টি, ঝাল, টক নানা পদের মুখরোচক এসব পিঠার নাম শুনলেই জিভে জল ধরে রাখা দায়। বাঙালি সংস্কৃতিতে অতিথি আপ্যায়নে আজও পিঠার প্রচলন দেখা যায়। আমাদের বাংলাদেশে যখন কৃষকদের  ঘরে নতুন ফসল উঠে তখন পিঠা পায়েসের আয়োজন যেন বেড়ে যায় কয়েকগুন। তবে শীতের সঙ্গে পিঠার সম্পর্কটা অনেক আপন সম্পর্ক। শীত শুরু হতে না হতেই খেঁজুরের রস দিয়ে পিঠা খাওয়ার মজা আরও বাড়িয়ে দেয়। শীতের মিষ্টি রোদের উষ্ণতা নেয়ার সঙ্গে মজার সব পিঠা খাওয়ার আনন্দই আলাদা। চালের গুড়া, গুড়, দুধ, ¶ীর, নারিকেল, মসলা প্রভৃতি প্রয়োজন মতো মিশিয়ে বিভিন্ন ধরনের পিঠা তৈরি করা হয়ে থাকে। পিঠাকে আরও লোভনীয় করার জন্য  হরেক রকমের নকশা করা হয়। পিঠার গায়ে নানারকম নকশা আঁকা থাকায় একে বলা হয় নকশি পিঠা। এলাকার ভিন্নতায় ¯^াদ ও ডিজাইন আলাদা হয়ে থাকে। তবে আমাদের দেশে সব মিলিয়ে যে কত রকমের পিঠা আছে তা বলা মুশকিল। কিছু পিঠা আছে প্রায় সব অঞ্চলেই পরিচিত। বাংলাদেশের  উল্লেখযোগ্য  কয়েকটি পিঠা হল- ভাঁপা পিঠা, পোয়া পিঠা, পাকান পিঠা, ফুল পিঠা, ঝাল পিঠা, ভেজিটেবল পিঠা, গোলাপ পিঠা, লবঙ্গ পিঠা, ছাঁচ পিঠা, লতিকা পিঠা, সন্দেশ, পানতোয়া পিঠা, রসফুল পিঠা, নকশি পিঠা, পুডিং পিঠা, দুধরাজ পিঠা, চিতই পিঠা, চুটকি পিঠা, চাপড়ি পিঠা, ঝুড়ি পিঠা, জামদানি পিঠা, মালাই পিঠা, হাঁড়ি পিঠা, সুন্দরী পিঠা, পুলি পিঠা, ঝিনুক পিঠা, পাতা পিঠা, পাটিসাপটা পিঠা, সূর্যমুখী পিঠা, সরভাজা পিঠা, দুধ পিঠা, জামাই পিঠা, আন্দশা পিঠা, কাটা পিঠা, বিবিখানা পিঠা, সাজ পিঠা, ডিম চিতইপিঠা, কাঁঠাল পিঠা, কাঁঠালপাতার পিঠা, খাস্তা পিঠা, গুড় পিঠা, চাল পিঠা, ছানারপিঠা, ছড়া পিঠা, জামাইভোগ পিঠা, জালা পিঠা, ডোবা পিঠা, তিলকুলি পিঠা, দৈলা পিঠা, দুধকদু পিঠা, পাক্কাশ পিঠা, পাপড় পিঠা, বরফি পিঠা, বড়া পিঠা, মেরা পিঠা, চিতল পিঠা, ছাড়াও আরো অনেক রকম বাহারী পিঠা রয়েছে। পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল পৌরসভার ওয়াপদা গেইট নতুন বাজারে যাওয়ার প্রথম সড়কে এক পিঠা ব্যবসায়ি মোক্তার হোসেন বলেন, ১৬ বছর হলো এখানে পিঠার ব্যবসা করছি। দিন দিন বেচা-বিক্রি বাড়ছে।  সকাল ১০টা থেকে রাত ১০ টা পযর্ন্ত দোকান চলাকালীন এখানে ক্রেতার ভিড় লেগেই থাকে। আমার দোকানের পিঠা অনেক ক্রেতারা বাসাবাড়িতেও নিয়ে যায়। মোক্তার হোসেন শুধু চিতল ও ডিম পিঠাই বিক্রি করেন। এছাড়া শীতের সময় খেঁজুরের রস খাওয়ার মজাটার কথা আর কি বলবো?। এক সময় শীত শুরু হতে না হতেই পলাশ উপজেলা সহ নরসিংদী জেলার বিভিন্ন উপজেলায় প্রায় অনেক ঘরেই দেখা যেত পিঠা তৈরী করতে কিন্তু এখন হয়তো অনেকটাই কমে গেছে। তাই বলে পিঠা খাওয়ার ¯^াদ কিন্তু ভূলেনি কেউ। ঘরে পিঠা তৈরী না হলেও দোকান থেকে পিঠা নিয়ে ¯^াদ মিঠাচ্ছেন সবাই।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন