নরসিংদী সংবাদদাতাঃ
নরসিংদীর রায়পুরার চানপুর ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামে মেঘনার ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। গত শনিবার রাত থেকে অব্যহত ভাঙ্গনে ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামের ওয়াসেক মিয়া, বরকত আলী, মনির ও নুরজাহান বেগমের বসতভিটাসহ অর্ধশত বসতভিটা মেঘনা নদীর গর্ভে সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে আরো শতাধিক বাড়িঘর। ভাঙ্গনের হাত থেকে বাঁচার জন্য অনেকেই বাড়ি-ঘর ভেঙ্গে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে। এসব বাড়ি-ঘরের ভিটিগুলো মেঘনা নদীর গর্ভে তলিয়ে গেছে।
চানপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোমেন সরকার জানিয়েছেন, ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে মেঘনায় ব্যাপক খরাস্রোত দেখা দিয়েছে। স্রোরােতের পানি পাড়ে ধাক্কা লেগে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এবছর আষাঢ় মাসে ভারী বর্ষণ না হওয়ায় এলাকার লোকজন ভেবেছিল এ বছর হয়তো ভাঙ্গনের পরিমাণ কম হবে। কিন্তু গত শনিবার রাতে পানির স্রোত তীব্র আঁকার ধারণ করলে রাত সাড়ে ১১ টায় হঠাৎ কয়েকটি বাড়ি মেঘনা গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এ সময় নদীপাড়ের লোকজনের মধ্যে কান্নাকাটি শুরু হয়। সম্ভাব্য ভাঙ্গনের আশঙ্কায় আশেপাশের বাড়ির লোকজন তাদের ঘর থেকে আসবাবপত্র, তৈজসপত্রসহ বিভিন্ন মালামাল নিরাপদ স্থানে সরাতে শুরু করে এবং তারা তাদের ঘরগুলোকে তাৎক্ষণিকভাবে ভেঙ্গে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যায়। যাদের ঘর নিরাপদ স্থানে নিয়ে গেছে তাদের ভিটিগুলো ভেঙ্গে মেঘনার পানিতে তলিয়ে গেছে। আরো শতাধিক বাড়িঘর হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। ভাঙ্গন অব্যাহত থাকলে এবং এ সময় যদি ভারী বর্ষণ শুরু হয় তবে নদী পাড়ের এসব বাড়িঘর মেঘনা গর্ভে বিলীন হবার আশঙ্কা করছে পাড়ের মানুষ। তিনি জানিয়েছেন, ভাঙ্গনের শিকার মেঘনা পাড়ের পরিবারগুলো এখন খুবই অসহায় অবস্থায় পতিত হয়েছে। তাদের ঘরে খাবার নেই। লোকজন গ্রাম থেকে যা কিছু খাবার সরবরাহ করছে তাই খেয়ে তারা কোন রকমে দিনাতিপাত করছে। সরকারি সাহায্য না পেলে পরিবারগুলো ব্যাপকক্ষ
এলাকাবাসী জানায়, বছরের প্রায় সকল দিনই চাঁনপুর ইউনিয়নে মেঘনার ভাঙ্গন অব্যাহত থাকে। গত কয়েক বছরে এই ইউনিয়নের ইমামদীকান্দী নামে একটি গ্রাম মেঘনা গর্ভে সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে গেছে। সদাগরকান্দী, মোহিনীপুরেও কমকরে পাঁচ শতাধিক পরিবার ভাঙ্গনের শিকার হয়েছে। ইমামদীকান্দী গ্রামের শতাধিক পরিবার নদীর পূর্বপাড়ে জেগে উঠা চরে তাদের বসতি স্থাপন করেছে। ইমামদীকান্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ভাঙ্গনের শিকার হয়। সেটিও একই নামে পূর্বপাড়েরচরে স্থানান্তর করা হয়েছে। ভাঙ্গনের কারণে চানপুর ইউনিয়নের কমবেশি ৩ হাজার মানুষ পূর্বপাড়ে জেগে উঠাচরে বসতি স্থাপন করে নবীনগরের বীরকান্দী ইউনিয়নের সদস্য হয়ে গেছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন