বাইজিদ খান পন্নি, পলাশ প্রতিনিধিঃ
নরসিংদীর পলাশে জুয়া খেলার প্রতিবাদ করায় পারভিন আক্তার (৩০) নামে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পর থেকে নিহতের স্বামী ফারুক মিয়া পলাতক রয়েছে। মঙ্গলবার রাতে উপজেলার দড়িহাওলা পাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আজ বুধবার দুপরে পুলিশ নিহতের বসত ঘর থেকে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।
স্থানীয়রা জানায়, দড়িহাওলা পাড়া গ্রামের ফালু মিয়ার ছেলে সিএনজি চালক ফারুক মিয়ার সাথে ঘোড়াশাল আটিয়াগাও গ্রামের আব্দুল রাজ্জাক মিয়ার মেয়ের পারভীন আক্তারের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে ফারুক মিয়া জুয়া খেলায় আসক্ত হয়ে পড়ে। এ নিয়ে তাদের সংসারে ঝঁগড়া বিবাদ লেগে থাকত। জুয়া খেলার প্রতিবাদ করায় ফারুক তার স্ত্রীকে প্রায় সময় মারধর করত। মঙ্গল
বার রাতে আবারো এলোপাথারি মারধর করলে পারভীন অচেতন হয়ে পড়ে। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত বলে জানায়। প্রতিবেশী নুরুল ইসলাম জানান, রাত ১১ টার সময় ফারুকের বউয়ের চিৎকার শুনে তাদের ঘরে যাই। পরে মারধর না করতে ফারুককে অনুরোধ করি। এর এক ঘন্টা পর আবারো চিৎকার শুনে গিয়ে দেখি তার বউ মাটিতে পড়ে আছে। নিহত পারভীনের মা জানান, রাত ২টার সময় মেয়ের স্বামীর বাড়ি থেকে ফোন করে জানায় পারভীন অজ্ঞান হয়ে গেছে। পরে তার স্বামীর বাড়ি এসে মেয়ের লাশ বারান্দায় পড়ে থাকতে দেখি। তিনি বলেন, ফারুক জুয়া খেলে অনেক টাকা নষ্ট করেছে। পারভীনকে দিয়ে বিভিন্ন সমিতি থেকে টাকা তুলে তাও জুয়া খেলে শেষ করে। এসব নিয়ে প্রায় সময় ফারুক পারভীনকে মারধর করত। এ নিয়ে অনেক বার সামাজিক দেনদরবারও করা হয়। কিন্তু কে জানতো জুয়ার প্রতিবাদ করায় আমার মেয়েকে লাশ হতে হবে। এদিকে ফারুকের পরিবারের পক্ষ থেকে পারভীনের রেখে যাওয়া তিন সন্তানদের জমি লিখে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা না করার জোড় চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানা যায়। পলাশ থানার ওসি (তদন্ত) বিপ্লব কুমার দত্ত জানান, ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নরসিংদীর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে স্বামীর এলোপাথারি মারধরে তার মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পর থেকে ফারুক পলাতক রয়েছে।
বাইজিদ আহাম্মেদ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন