![](https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEj4eFfkgP2NvRQIpe0ZPY_VLpDXPaJ8eRO_CGixZ-LlsqluttGf8VGlMczacgicS2lvm-Y4OlRc4npsQldmoSYKqsr3a57iRwpu7Qfr_PCfmHnpXOck6t7Ld7UrSFiMRUnKHQXBJcCqf_Q/s320/palash13.03.018.jpg)
জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, নরসিংদী সংবাদদাতাঃ
গত চার বছর হলো স্বামী মারা যায়। স্বামী মারা যাওয়ার পর স্বামীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দেখবালের দায়িত্ব নেয় ছেলেরা। প্রথম কয়েকমাস ভালই চলছিল। কিছুদিন যাওয়ার পর ছেলেরা অন্য মানসিকতায় চলে যায়। দিন দিন তারা আমার সাথে কেমন জানি আচরণ করতে থাকে। তাদের কাছে আমি যেন একটি বোঝায় পরিণত হয়ে ওঠেছি। দুই ছেলের বউদের কথাবার্তায়ও ওঠে আসে বিরক্তির ছাপ। হঠাৎ করে তারা আমাকে আলাদা করে দেয়।
তারা বলে এখন থেকে আমাকে আলাদা ভাবে খেতে হবে। মাসে মাসে কিছু বাজার সদাই করে দেয় তা দিয়ে কোনো রকম খেয়ে না খেয়ে দিন পার করতে হয় আমাকে। অথচ একই ছাদের নিচে ছেলে সন্তানদের সাথে বসবাস করে আসছি। কথা গুলো বলতে বলতে ফুপিয়ে কেঁদে ওঠেন পাঁচ সন্তানের জননী কুলসুম আক্তার। তিনি চার ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ওয়াপদা (নতুন বাজার) এলাকায় বসবাস করেন। তার স্বামী ফজলুল হক পলাশ বাজার এলাকায় কাপড়ের ব্যবসা করতেন। চার বছর হলো তার স্বামী মারা যায়। বড় ছেলে মাসুদ মিয়া মানসিক রোগী হওয়ায় স্বামীর ব্যবসার দায়িত্ব নেয় অপর দুই ছেলে বেলায়েত হোসেন ও আল-আমিন। গত কয়েক মাস হলো বেলায়েত হোসেন ও আল আমিন তার উপর অমানবিক নির্যাতন চালাচ্ছে বলে পলাশ থানায় অভিযোগ করে তাদের মা কুলসুম বেগম। শারীরক নির্যাতনের পাশাপাশি ঘুমের ঘরে গলা টিপে হত্যা করার চেষ্টাও চালায় বলে অভিযোগ করেন তিনি। এ ছাড়া গত কয়েকদিন ধরে মায়ের জন্য বাজার সদাইও বন্ধ করে দেয় পাষন্ড এই দুই ছেলে। নির্যাতিত পাঁচ সন্তানের জননী কুলসুম আক্তার বলেন, আমার চার ছেলে এক মেয়ে। বড় ছেলে মানসিক রোগী হওয়ায় স্বামীর ব্যবসার দায়িত্ব নেয় অপর দুই ছেলে বেলায়েত এবং আল আমিন। ছোট ছেলে আশিক লেখাপড়া করে ও ছোট মেয়েকে গত কয়েকমাস পূর্বে বিয়ে দেওয়া হয়। পরিবারের ভরণ পোষণের সমস্ত দায়িত্বের ভার পড়ে দুই ছেলে বেলায়েত ও আল আমিনের উপর। তারা দুই ভাই মিলে আমার স্বামী মারা যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার বাবার দাফন কাফন রেখেই আলমারী ভেঙে বাড়ির দলিলপত্র ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ নগদ টাকা-পয়সা নিজেদের কব্জায় নিয়ে নেয়। স্বামী মারা যাওয়ার কয়েক মাসের মাথায় ছেলেরা তাদের বউদের পরামর্শে আমাকে আলাদা করে দেয় এবং আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার জন্য প্রতিনিয়ত আমার উপর অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। তারা আমার খাবারের বাজার সদাইও বন্ধ করে দিয়েছে। কিছু বলতে গেলে আমাকে মারতে লাঠি নিয়ে ছুটে আসে। কয়েকবার এই দুই ছেলে আমার ঘায়ে আঘাত করে। আমার আত্মচিৎকারে আশেপাশের মানুষ ছুটে আসলে আমাকে মানসিক রোগী বলে জানায়। মায়ের উপর দুই ছেলের অমানবিক নির্যাতনের কথা স্বীকার করে কুলসুম আক্তারের মেয়ে তাজরিন আক্তার জানান, বড় ভাই বেলায়েত ও আল আমিন দীর্ঘদিন ধরে মায়ের উপর নির্যাতন করে আসছে। আমি প্রতিবাদ করতে গেলে তারা আমাকেও মারতে আসে। এ ব্যাপারে কুলসুম বেগমের দুই ছেলে বেলায়েত হোসেন ও আল আমিনের সাথে কথা বললে তারা এসব অভিযোগের কথা অস্বীকার করে জানান, তাদের মা একজন মানসিক রোগী। তাই মানুষের কাছে গিয়ে ছেলেদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন